বর্ষায় ব্রিজের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলে যাওয়া!
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরাম গ্রামের সুইস গেটের পাশে নালার ওপর ব্রিজের অভাবে বর্ষা মৌসুমে স্কুলে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায় পূর্ব ধনীরাম চর ও বাঘ খাওয়ার চরের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুর্ব ধনীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে চকাইল ঘাট ও পূর্ব ধনীরাম নতুন আবাসন যাওয়ার রাস্তায় এই নালাটির ওপর নির্মিত কাঠের ব্রিজটির অর্ধেক অংশ গত বছর বন্যার স্রোতা ভেসে যায়। যাতায়াতের একমাত্র পথের এই ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়ে এই চরের দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় সহস্রাধিক বাসিন্দা। বন্যার সময় নালাটিতে প্রবল স্রোত ও পানির প্রবাহ বেশি থাকায় এখানকার অভিভাবকরা ঝুঁকি নিয়ে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর সাহস পান না।
ফলে পূর্ব ধনীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়ভিটা উচ্চ বিদ্যালয়, বড়ভিটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও শাহবাজার মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময় স্কুলে না যাওয়ায় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের শিক্ষা জীবন।
এই চরের কয়েকজন শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণির সাথী, সবুজ, প্রথম শ্রেণির জুয়েল, কাজলী, প্রাক-প্রাথমিকের শিশু শিক্ষার্থী শরীফ, ষষ্ঠ শ্রেণির শাহানাজ জানায়, তারা নিয়মিত স্কুলে যেতে চায়। লেখাপড়া শিখে মানুষ হতে চায়। কিন্তু এই ব্রিজটি নির্মিত না হলে বর্ষার সময় তিন-চার মাস তাদের স্কুলে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তাদের দাবি ব্রিজটি যেন দ্রুত নির্মাণ করা হয়।
পূর্ব ধনীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান লিটন জানান, বন্যার সময় চরের রাস্তার দু’পাশ পানিতে নিমজ্জিত থাকে। কলাগাছের ভেলা বা ছোট ছোট নৌকায় শিশু শিক্ষার্থীদের পারাপার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ সময় চরের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না। তাই ব্রিজটি নির্মিত হলে তাদের শিক্ষা জীবন থেকে তিন-চারটি মাস নষ্ট হবে না।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আঃ হামিদ জানান, ছোট এ ব্রিজটি নির্মিত হলে চরাঞ্চলের মানুষ সহজে বড়ভিটা ও ফুলবাড়ী উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়া বড়ভিটার মানুষ এই পথে চকাইল ঘাট হয়ে বড়বাড়ী, পাঙ্গা হয়ে দেশের যে কোনো স্থানে সহজে যাতায়াত করতে পারবে। এখানকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বিশেষ করে কলা, পাট, ভূট্টা সহজে অল্প সময়ে বাজারজাত করতে পারবে। ছোট এই ব্রিজটি এখানকার মানুষের জীবনযাত্রাকে বদলে দেবে অতি সহজে। তাই তিনি দ্রুততম সময়ে ব্রিজটি নির্মাণ করার দাবি জানান।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই